Charukala Shilpo Niketan

Art and Craft School

Saturday, July 25, 2020

বাংলার গ্রামীন সমাজে পটচিত্র সমন্ধে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর।

আলোচ্য বিষয়সমূহ: পটচিত্র কি ও উদ্ভবের কারণ, পটচিত্রের জেলাভিত্তিক প্রকারভেদ পটচিত্র এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ভূমিকা কি?

                    সংজ্ঞা: কাপড়ের উপর আঠা মিশ্রিত প্রলেপ দেওয়ার পর কোন কাহিনী বা গল্প অবলম্বন করে যে সব চিত্র অঙ্কন করা হত তা পটচিত্র নামে পরিচিত। পটচিত্রে বিভিন্ন দেশজ রঙের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় দেখা যায়; যেমন: ইটের গুঁড়া, কাজল, লাল সিঁদুর, সাদা খড়ি, আলতা, কাঠ-কয়লা ইত্যাদি। এই পট কথাটি সংস্কৃত ও ঐতিহ্য'র বাহক প্রাচীন কাল থেকেই উদ্ভব। 

                    প্রধানত দুই রকম পটচিত্র দেখা যায়। প্রথমত চৌকোপট আর দ্বিতীয়টি জড়ানো বা গুটানো পট। এছাড়াও বিষয়বৈচিত্র অনুসারে সাধারণভাবে পটকে ছয়ভাগে বিভক্ত করা যায়। সেগুলি হল - বিষয়নিরপেক্ষ, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, ধমীয়, সামাজীক এবং পরীবেশগত তৎকালীন সময় ধর্ম্ম কাহিনী প্রচার করতে এইরূপ চিত্রাঙ্কন করা হত। যেমন - চকসুদন পট, যমপট, সাহেবপট, কালিঘাটপট (বিখ্যাত: পশ্চিমবঙ্গ), গাজীপট (বিখ্যাত: বাংলাদেশ), সত্যপীড়েরপট, পাবুজীপট, চৈতন্যদেব, বৈষম্য ধর্মের কাহিনী, কৃষ্ণলীলার বিষয়বস্তু ইত্যাদি বাঁকুড়া পুরুলিয়ার পটচিত্রকে পাটদার বলে। বীরভূম, মেদনীপুরের পটচিত্র যারা করেন তাদের বলে চিত্রকর। আবার বাংলাতে একে পটুয়া বলে থাকে। বীরভূমের পটুয়া পাঞ্চকল্যাণ পটে: রামসীতা, কালি, কাত্যায়নী ও নিমাই সন্ন্যাস দেখা যায় এছাড়া চক্ষুদান পট, যমপট, গাজিপট, পীরপট ও হিন্দুপুরাণ পট রয়েছে।

                    আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে পট শিল্পের নামকরণ ভিন্ন হলেও আধুনিক যুগে পটচিত্রের পরিবর্তন ধারা লক্ষ্য করা যায়। সময়সাপেক্ষ যুগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আধুনিকতার ছোঁয়ার পটচিত্র আজ বিলুপ্তের মুখে। তবে একথা হলফ করে বলাই যায়, বাংলার পটশিল্প ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় পটচিত্র অর্থনৈতিক যোগান দেয়।।

                              - চারুকলা শিল্প নিকেতন